বরিশালের চাঞ্চল্যকর সুরুজ গাজী হত্যা মামলার ০১ নং আসামী শাহিন সরদার র্যাব-৮ ও র্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার।
মোঃ সুমন
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর হত্যার মত নেক্কারজনক ঘটনার সাথে জড়িত আসামীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আটক করে আইনের আওতায় এনে সাধারণ জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে র্যাব। গত ০২ মার্চ ২০২৫ইং তারিখে বরিশাল মহানগরের কাউনিয়া থানায় একটি হত্যাকান্ড সংঘঠিত হয়। বরিশালের কাউনিয়া থানাধীন গাউয়াসার এলাকার বাসিন্দা শাহীন সরদার ও সুরুজ গাজী এর মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ০২ মার্চ ২০২৫ তারিখ বিকাল আনুমানিক ০৫:৩০ ঘটিকার সময় উভয়ে বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হয়।
পরবর্তীতে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই দিন সন্ধ্যা আনুমানিক ০৭:১০ ঘটিকায় শেরে-ই-বাংলা স্কুলের পিছনে রাজ্জাকিয়া মাদ্রাসা সড়কে মুন্সী বাড়ীর গলির মোড়ে ০১ নং ভিকটিম সুরুজ গাজী (৩৫), পিতা-মৃত কাঞ্চন গাজী এবং ০২ নং ভিকটিম নয়ন (৪০), পিতা- শানু হাওলাদার সর্ব সাং-গাউয়াসার, থানা-কাউনিয়া, জেলা-বরিশাল’দ্বয়কে একত্রে পেয়ে আসামী শাহীন সরদার (৪৫) ও তার তিন ছেলে ইমরান সরদার (২৭), লিমন সরদার(২২), লিয়ন সরদার(১৮) এবং আসামীর স্ত্রী শাবানা (৪০)’সহ মামলার এজাহারে বর্ণিত অন্য দুইজন আসামী এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জন আসামীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একত্রিত হয়ে পূর্ব ঝগড়ার রেশ ধরে তাদের পথরোধ করে। এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী আসামী শাহিন সরদার, তার তিন ছেলে এবং স্ত্রী শাবানাসহ অন্যান্য আসামীরা সমন্বিতভাবে দা ও চাপাতি দ্বারা ভিকটিম সুরুজ গাজীকে নৃশংসভাবে এলোপাথারি আঘাত করে। এছাড়াও, ভিকটিম নয়নকে পিঠে কোপ দেওয়া ছাড়াও তার ডান হাতে গুরুত্বর আঘাতের মাধ্যমে হাড় ভেঙ্গে দেয়। পরবর্তীতে, স্থানীয় জনগন ভিকটিমদের আর্ত-চিৎকারে এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্ত্যব্যরত চিকিৎসক ভিকটিম সুরুজ গাজীকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের বড় ভাই মোঃ শাহিন গাজী (৩৯) বাদী হয়ে বরিশালের কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা ঘটনার দিন রাতে এবং ০৩ মার্চ ২৫ তারিখে দুই দফায় আসামী শাহিন সরদার এর বাড়িতে অগ্নি সংযোগ করে।
বহুল আলোচিত এই নৃশংস হত্যা কান্ডের প্রেক্ষিতে র্যাব-৮, বরিশাল ঘটনার গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। এজাহারে বর্ণিত সকল আসামী এ হত্যাকান্ড সংঘঠনের পরপরই আত্মগোপনে চলে যায়। হত্যাকান্ডে জড়িতদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আসামীর অবস্থান সনাক্ত করে র্যাব-৮, সদর কোম্পানী এবং র্যাব-৩, সদর কোম্পানীর একটি যৌথ চৌকস আভিযানিক দল। গত ০৮ মার্চ ২০২৫ দিবাগত রাত ১১:০৫ মিনিটে ঢাকা মহানগরের সবুজবাগ থানাধীন মাদারটেক কাঁচা বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত মামলার ০১ নম্বর আসামী শাহীন সরদার@সোনা শাহিন, পিতা-মৃত দেলোয়ার সরদার, সাং-গাউয়াসার, থানা- কাউনিয়া, জেলা-বরিশাল’কে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে বরিশাল জেলার কাউনিয়া থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।