মির্জাগঞ্জে মহিলার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে চলছে টালবাহানা
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে তানিয়া বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে পারিবারিক বিরোধের জেরে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে তানিয়ার স্বামীকে মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছেন। তবে চলছে টালবাহানা।
গৃহবধূ তানিয়া বেগম মির্জাগঞ্জ উপজেলার ২ নং মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মনোহরখালী গ্রামের মাহবুব ফকিরের স্ত্রী ও খুলনা জেলার সদর উপজেলার হাজী মহসিন রোড় আবু খান লেন সড়কের আতিক মল্লিকের মেয়ে। তাঁরা বর্তমানে ঢাকার মিরপুরে থাকে। এদের সংসারে ১৮ বছরের একটি ছেলে ও ১১ বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১৯ জুলাই ) সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে তানিয়া বেগমকে তাঁর স্বামী মাহবুব ফকির সহ দুই তিনজন লোক মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। জরুরা বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর কি সমস্যা জিজ্ঞাসা করলে স্বামী মাহবুব বলেন স্টোক করছে। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক মেহেদী হাসান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রোগী জীবিত নেই বলেন এবং রোগীর গলার নিচে কালো দাগ দেখে সন্দেহজনক মনে হলে মির্জাগঞ্জ থানায় খবর দেন। রোগী জীবিত নেই খবর শুনে স্বামী সহ যারা হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁরা সকলে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যায়। মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালীর মর্গে পাঠানের উদ্দেশ্যে নিয়ে যান। খবর পেয়ে নিহত তানিয়া বেগমের মা-বাবা ভাইসহ পিত্রালয়ের লোকজন রাতেই ঢাকা থেকে মির্জাগঞ্জ থানায় উপস্থিত হয়। তাঁরা সকাল থেকে মামলা করার প্রস্তুতি নিলেও দুপুর গড়াতেই ঘটনা নেয় অন্য মোড়।
নিহত তানিয়ার ভাই টগর মল্লিক জানান, প্রতিবেদন আসার পরে মামলা করবো। তখন তাকে বলা হয়,এ রিপোর্ট আসতে তো আট নয় মাস সময় লেগে যেতে পারে। তিনি বলেন,লাগুক তখন করব।
অন্যদিকে অফিস ইনচার্জ (ওসি) এর কক্ষ এমনকি থানা ভবনে সাংবাদিক প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরকে ঢুকতে বাঁধা দেওয়া হয়। কী ঘটছে ভিতরে সেটা নিয়েও জন্ম নেয় নানান প্রশ্ন। সকাল ১০টায় ওসি সর্বশেষ তথ্য জানালেও এরপর আর তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সুযোগ দেননি।
তানিয়ার ভাই সাগর মল্লিক জানান, আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এর সাথে মাহবুবসহ বাহিরের অন্য কেউ জড়িত থাকতে পারে। আমার বোনের পরিবারের সাথে জমিজমা নিয়ে বাহিরের লোকজনের সাথে কিছুদিন যাবত ঝামেলা চলছিল। আমরা তাদেরকেও সন্দেহর তালিকায় রাখছি। আমরা চাই আমার বোনেকে হত্যার প্রকৃত অপরাধী বেরিয়ে আসুক।
মির্জাগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম সকাল ১০টার দিকে মুঠোফোনে জানান,এখন পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে এটি হত্যা। লাশ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালীর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।